প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কে টিভি নিউজ: ২০ মার্চ: কোলকাতার গার্ডেনরিচের নিয়ম বহির্ভূত নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে পড়ে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর উদ্বিগ্ন গোটা গার্ডেনরিচ এলাকা সহ কোলকাতা। এনিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর শহরবাসীর মধ্যেও। তারই মাঝে সমাজ মাধ্যমে (facebook) এ বিস্ফোরক পোস্ট করেন মেদিনীপুর পুরসভার ২১ নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর মহম্মদ সাইফুল হোসেন। তিনি facebook পোস্টে লিখেছেন, “যেভাবে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে মেদিনীপুরে, একদিন গার্ডেনরিচ হতে বাধ্য। পৌরপিতা সৌমেন খানের বদান্যতায়” আর মহ: সাইফুল হোসেনের এই পোস্টকে ঘিরে মেদিনীপুর শহর জুড়ে নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মেদিনীপুর শহর জুড়ে বহুতল নির্মাণে উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর। বহুতল নির্মাণ নিয়ে মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খানকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। গত ৫ মার্চ মেদিনীপুরে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার হেলিকপ্টার অবতরণ করে শহরের বিধাননগর মাঠে। সেখানে হেলিকপ্টার থেকে নেমে তাঁর চোখে পড়ে চারিদিকে বহুতল। সুত্রের খবর এরপরই তিনি পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খানকে জানতে চান এতো উচুঁ উচুঁ বহুতল তৈরী হচ্ছে কিভাবে ? এনিয়ে কড়া বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে মেদিনীপুর শহর জুড়ে গড়ে উঠছে বেশ উচুঁ উচুঁ বহুতল। যেখানে নির্দিষ্ট কোন উচ্চতার বালাই নেই। আর এনিয়ে শহরের মানুষও বিরক্ত। তাদের কথায় আগামী কয়েক বছরে মেদিনীপুর শহরবাসীর দম বন্ধ হয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হবে এবং যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটলে বহু মানুষের প্রাণহানীর আশঙ্কাও তৈরী হবে। বহুতল নির্মাণ নিয়ে শাসক বিরোধী দলগুলিও বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। পার্কিং বিহীন বহুতল নির্মাণ, যেখানে দমকলের গাড়ি ঢোকার সুযোগ নেই, সেই জায়গায় বহুতল নির্মাণ নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা, কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ শাসক বিরোধী গেরুয়া শিবির থেকে বাম কংগ্রেসের।
যদিও এবিষয়ে মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান জানান, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এতো বহুতল হচ্ছে কেন, দেখবেন যাতে না হয়। আমরা বলেছি যাতে নতুন করে আর না হয়, সেদিকটা দেখবো এবং জি প্লাস 6 এর বেশী বহুতলের অনুমতি নতুন করে কাউকে দেওয়া হবেনা বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে এনিয়ে মেদিনীপুর দমকল বিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক বামদেব চৌধুরী জানান, মেদিনীপুর শহরে এরকম অনেক বহুতল আছে, যার ছাড়পত্র দমকল বিভাগ দেয়নি। তবে সেইসব বহুতলের মালিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রশাসনের কাজ দমকল বিভাগের নয়।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে আদৌ কি বন্ধ হবে নিয়ম বহির্ভূত বহুতল নির্মাণ, নাকি যেমন চলছে শহরের আনাচেকানাচে নিয়ম বহির্ভূত বহুতল নির্মাণ তেমনই চলবে। সে প্রশ্নই এখন মেদিনীপুর বাসীর।