প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: কে টিভি নিউজ:২৭ ফেব্রুয়ারী: এবার গনবিবাহ জঙ্গলমহলে। একসঙ্গে সাত জোড়া দম্পতির চার হাত এক করার উদ্যোগ গ্রহন করল আম্মা জনসেবা পরিষদীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। আর উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল সাতপাটি নেতাজী স্পোর্টিং ক্লাব ও খড়্গপুর দ্বীপ মহিলা সংগঠন সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য সদস্যারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই গনবিবাহের আসর বসেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী ব্লকের সাতপাটি স্কুল ময়দানে। যেখানে আইন অনুযায়ী ধর্মীয় আচার ও রীতিনীতি মেনে অনুষ্ঠান করে সাত জোড়া যুবক যুবতীর একসঙ্গে বিয়ের আয়োজন করা হয়। আর সেখানেই পুরোহিত সহকারে এবং রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে বিয়ে দেওয়া হল সাতজোড়া দম্পতির। আম্মা জনসেবা পরিষদীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সহ সভাপতি মানস মাইতি জানান, জঙ্গলমহলে এই ধরণের গনবিবাহের উদ্দেশ্য, একদিকে যেমন বাল্যবিবাহ রোধ করা, তেমনই অন্যদিকে ভিন রাজ্যে মেয়েদের বিবাহ বন্ধ করা। মানস মাইতি বলেন, বিশেষ করে জঙ্গলমহলের পিছিয়ে পড়া এলাকায় দেখা যায়, ভাল ছেলের সন্ধান পেয়ে অনেক সময় গরীব বাড়ির মেয়ের মা বাবা নাবালিকা অবস্থায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়। যার ফলে সেই নাবালিকা মেয়েটি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। আবার এও লক্ষ্য করা গেছে গরীব বাড়ির মেয়েদের অর্থের বিনিময়ে উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড, বিহারের মতো ভিন রাজ্যের ছেলেরা বিয়ে করে নিয়ে যায়, কিন্তু তারপর সেই মেয়ের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। তাই এই ধরণের ঘটনা গুলি যাতে বন্ধ হয়, তার জন্যই এই উদ্যোগ।
অন্যদিকে আম্মা জনসেবা পরিষদীয় ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এ. ডি বর্মন বলেন, এই ধরণের উদ্যোগ তাও জঙ্গলমহলে, সত্যি অভাবনীয়। এই গনবিবাহ একদিকে যেমন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে হচ্ছে, তার পাশাপাশি বিবাহের জন্য যে সমস্ত যুবক যুবতীকে চয়ন করা হয়েছে, তাদের উভয়ের মধ্যে মনের মিল, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় প্রত্যেকের বিবাহের ক্ষেত্রে আইনি স্বীকৃতি নেওয়া হয়েছে ম্যারেজ রেজিস্ট্রির মাধ্যমে।
খড়্গপুর দ্বীপ মহিলা সংগঠনের তরফে এই ধরণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। একই সাথে আগামীদিনে বিভিন্ন সামাজিক কাজে এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকারও করেছে সংগঠন।
প্রসঙ্গত, এদিনের গনবিবাহের পর কনের পরিবারের তরফে বরকে দেওয়া হয় দান সামগ্রীও। এছাড়াও প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষের খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন সোসাইটির কর্মকর্তারা।