প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কে টিভি নিউজ: ২৮শে ফেব্রুয়ারী: ঝাড়গ্রামের শিলদা ইএফআর (EFR) ক্যাম্পে মাওবাদী হামলার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জন ইএফআর (EFR) জওয়ানের। ১৪ বছর ধরে চলতে থাকা বিচার প্রক্রিয়ায় মঙ্গলবার ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আদালতের এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এন্ড সেশন জজ সেলিম শাহী (Salim Shahi)। দোষী সাব্যস্ত ২৩ জনের মধ্যে বুধবার ১৩ জনকে তোলা হয়েছিল আদালতে। বিচারক ওই ১৩ জনের কাছ থেকে বক্তব্য শোনার পর আজীবন কারাদণ্ড সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আরও ১০ জনের সাজা ঘোষনা করার কথা রয়েছে বলে আদালত সুত্রে খবর। বুধবার সাজা ঘোষনার পর আদালত থেকে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় চিৎকার করে প্রতিবাদ জানায় আসামিরা। তাদের দাবি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার তারা।
প্রসঙ্গত, এদিন আদালতে তোলা হয়েছিল মানস মাহাত, রাজেশ হাঁসদা, শুকলাল সরেন, কানাই হাঁসদা, শান্তনু সরেন, শ্যাম চরণ হাঁসদা, কল্পনা মাইতি (অনু), রাজেশ মুন্ডা, মনসারাম হেমব্রম (বিকাশ) ঠাকুরমনি হেমব্রম (তারা), ইন্দ্রজিৎ কর্মকার, কাজল মাহাত, মঙ্গল সরেনকে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১, ১২১এ, ১২২, ৩০২, ১২০বি, ইউএপিএ ধারায় ১৬(১)(এ), ১৮,২০,৩৮,৩৯। অস্ত্র আইনের ২৫ (১এএ), এন্ড ২৭(৩) এবং ৩,৪ এক্সপ্লোসিভ ধারায় সাজা ঘোষণা করেন বিচারক মেদিনীপুর এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এন্ড সেশন জজ সেলিম শাহী (Salim Shahi)।
বিচারক আসামিদের জানিয়ে দেন “আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে আপনাদের কি বলার আছে বলতে পারেন। নির্দোষ বলে লাভ নেই। আপনারা এদিনের রায়ের পর কপি পেয়ে যাবেন, হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন।” উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল নাগাদ শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদীদের হামলার ঘটনায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ানের মৃত্যু হয়। ইএফআর জওয়ানদের পাল্টা গুলিতে নিহত হয় ৫জন মাওবাদী। ক্যাম্পে হামলার পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া ছাড়াও অস্ত্র লুট করেছিল মাওবাদীরা। এই ঘটনার পরই ইএফআর ক্যাম্প তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই ক্যাম্পের অদূরে শিলদাতে করা হয় রাজ্য পুলিশের স্ট্রাকো ক্যাম্প। ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে ৫জন ইএফআর জওয়ানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে একজন জুভেনাইলে রয়েছেন। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অন্যতম অভিযুক্ত ধৃত সুদীপ চংদার মারা গিয়েছেন। সেই হামলার মামলায় মঙ্গলবার ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। আজ (বুধবার) ২৩ জনের মধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন (আজীবন) কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। এদিন এপিডিআর (APDR)এর সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জয়শ্রী পাল সহ কয়েকজন এসেছিলেন আদালতে। জয়শ্রী বলেন, মিথ্যে সাক্ষীর বয়ানে সাজা ঘোষনা হয়েছে। এফআইআর এর ধারা অনুযায়ী সাজা হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আবেদন করা হবে।