প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কে টিভি নিউজ : ১২ মে:
৪ ঠা জুন ভোট গননা হবে। ৫ ই জুন থেকে উনি আর প্রধানমন্ত্রী থাকছেন না। সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক, ক্ষেতমজুর, নওজোয়ান আজ সংঘবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে তাড়াতে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছেন। ভোটের দফা যত বাড়ছে বিজেপির দফারফা ততই বাড়ছে, আর দেশের প্রধান মন্ত্রী ভূল বকতে শুরু করেছেন। এবারে নতুন সরকার হবে আপনারা মিলিয়ে নেবেন। এরাজ্যেও বিজেপিকে কোনঠাসা করতে হবে আর তৃণমূলকে জনবিচ্ছিন্ন করার উপযুক্ত সময়। রবিবার মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই প্রার্থীর সমর্থনে দাঁতনের তুরকা ও নারায়নগড়ে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন সিপিআইএম এর পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, এর জন্য বুথের লড়াইকে আরোও জোটবদ্ধ করুন, বাম ও কংগ্রেস কর্মী নেতা সহ সাধারণ মানুষকে কাছে টেনে নিয়ে। দিল্লী থেকে বিজেপিকে তাড়ানোর পর এরাজ্যে শুরু হবে আরোও বৃহত্তর আন্দোলন এবং এই দূর্ণীতিগ্রস্থ রাজ্যের সরকারকে উৎখাত করে বাংলার ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে কালিমা মুক্ত করে এক স্বচ্ছ জনগণের সরকার গড়ে তোলা। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই শাষকদল বিজেপি ও তৃণমূলের বোঝাপোড়া করে চলা ও দূর্ণীতিগ্রস্থদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে পদক্ষেপ না নেওয়ার তীব্র সমালোচনা সহ মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্টকে জয়ী করে মানুষের কন্ঠস্বর দিল্লীতে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানালেন সিপিআইএম এর পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র।
এদিন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট র সমর্থনে দাঁতনের তুরকা ও নারায়নগড়ের বেলদাতে পৃথক দুটি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআই এর রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জী, জাতীয় কংগ্রেস এর জেলা নেতৃত্ব শ্যামল কুমার ঘোষ, প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট এবং ফরওয়ার্ড ব্লক দলের জেলা নেতৃত্ব সুকুমার মন্ডল।
সূর্যকান্ত মিশ্র আরও বলেন, তৃণমূল দলটার জন্ম হয়েছে আর এস এস হাত ধরে বিজেপির সাহায্য নিয়ে। আর তৃণমূলের পৃষ্ঠপোষকতায় এরাজ্যে বিজেপির বিস্তার হয়েছে। দুটো দল নামে আলাদা বাইরে ঝগড়া করে। আসলে এরা একে ওপরের পরিপূরক। দিল্লীতে উনি ডাকাতি করছেন আর এখানে তৃণমূল চুরি দূর্ণীতি করলেও কেন্দ্রের সরকার নীরব। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে জেলে ভরতে পারে কিন্তু এখানে পিসি ভাইপোকে ছেড়ে রাখা হয়। এবারের ভোটের এজেন্ডা দূর্ণীতির বিরুদ্ধে এবং মানুষের রুটি রুজির সংকট সহ সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে। রামের জিগির, ধর্মীয় মেরুকরণের জিগির ফিকে হয়ে গেছে। আর পশ্চিম বাংলায় বাইনারিকে সাধারণ মানুষ ধাক্কা দিয়ে পেছনে ফেলে দিয়েছে। তৃণমূলের অত্যাচারে জর্জরিত মানুষ, পাট্টা বর্গা জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া মানুষ, কাটমানি ও তোলাবাজির হাত থেকে রক্ষা পেতে যেসব মানুষ তৃণমূলকে জব্দ করতে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন আজ তারা অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন, উল্টে বিজেপিও সাধারন মানুষকে জব্দ করেছে চোরদের শাস্তি না দিয়ে তাদের রেগার কাজ ও আবাস যোজনার থেকে বঞ্চিত করে। এখন এইসব পরিবার ফিরে আসছেন বাম প্রার্থীদের সমর্থনে। এরাজ্যে বাম ও কংগ্রেস এবার আরও সংঘবদ্ধ হয়ে বুথে বুথে লড়াইতে সামিল হয়েছেন।
এদিন দাঁতনের রথতলা মাঠে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্টি নেতা রতন দে। বেলদাতে সমাবেশের আগে এক বিরাট মিছিল হয়। বেলদা বাসস্ট্যান্ডে সেই সমাবেশে পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহা বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন পার্টির জেলা কমিটির সদস্য ভাস্কর দত্ত সহ বাম নেতৃত্ববৃন্দ।